অবশেষে ৭’মাস পর সিদ্ধিরগঞ্জের অপহৃত স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধারসহ অপহরণকারীকে গ্রেফতার করে র্যাব-১১। এ ঘটনায় গত ৯’মার্চ থানায় অপহরণের মামলা নথিভূক্ত হয়। এবং গ্রেফতারকৃত অপহরণকারীকে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
অন্যদিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক অপহরণের ঘটনাটিকে দীর্ঘ ৭’মাস ধরে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার প্রয়াসে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাড়িয়েছে। অপহৃতার বাবা হেলাল মিয়া তার স্কুল পড়ুয়া কিশোরী মেয়ে অপহরণের পর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অভিযোগ করে উল্টো উপ-পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাকের রোষানলে পড়েন।
জানাগেছে, বিয়ের প্রস্তার প্রত্যাখান করায় গত বছরের তিন আগস্ট অপহরণের শিকার হয় স্কুলছাত্রী। এ ঘটনায় অপহৃতা ছাত্রীর পিতা থানায় অভিযোগ করে কোনো সহায়তা পাননি। এমনকি মামলা দায়ের করতে চাইলেও পুলিশ মামরা নেয়নি। উল্টো ভুক্তভোগীর পিতাকে মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানোর হুমকি দেন উপ-পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক।
অন্যদিকে, দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলে তার মেয়েকে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলছে অপরণকারীরা। উপায়ন্তর না পেয়ে মেয়েকে উদ্ধার করতে জেলা পুলিশ সুপার বরাবরও লিখিত অভিযোগ করেন অসহায় পিতা।
অভিযোগে উল্লেখ করেন, সিদ্ধিরগঞ্জের সিআইখোলা বউ বাজার এলাকায় আল আমিনের বাড়ীতে সপরিবারে ভাড়া থাকেন হেলাল মিয়া। তার মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় একই বাড়ীর ভাড়াটিয়া নাঈম (২৫) নামে এক যুবক। বিয়েতে রাজি না হওয়ায় গত বছরের তিন আগস্ট তার মেয়েকে নাঈম ও আলামিন মিলে অপহরণ করে। এ ঘটনায় তখন তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগটির তদন্তের দায়িত্ব পান উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রাজ্জাক।
ঘটনার সাত মাস হলেও অপহৃতাকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। মেয়েকে উদ্ধারের জন্য ভিকটিমের পিতা থানায় গেলে তদন্তকারী কর্তকর্তা আব্দুর রাজ্জাক উল্টো তাকেই মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানোর হুমকি দিচ্ছেন।
ভিকটিমের পিতা বলেন, ঘটনার পর পরই আমি থানায় লিখিত অভিযোগ করি। পুলিশ মেয়েকে উদ্ধার করার আশ্বাস দেয়। ছয় মাস ধরে থানায় আসা যাওয়া করছি। অপহরণকারীরা যে মোবাইল নাম্বার দিয়ে আমার কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করছে সেই নাম্বারটি পুলিশকে দিয়েছে।
কিন্তু পুলিশ কিছুই করতে পারছেনা। আমাকে থানায় যেতে নিষেধ করা হচ্ছে। গেলে মামলা দিয়ে জেলে পাঠাবে বলে হুমকি দিচ্ছেন আব্দুর রাজ্জাক। তাই আমার মেয়েকে দ্রুত ফিরে পেতে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি গোলাম মোস্তফাকে বিষয়টি জানানোর পরও তিনি বলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযোগ তদন্তকারি সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এটা প্রেম সংক্রান্ত ব্যাপার। মেয়ের বাসায় গিয়ে তার পিতা ও আশপাশের লোকজনের সামনে ফোনে কথা হলে মেয়ে সরাসরি বলেছে সে নিজের ইচ্ছায় নাঈমের সাথে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছে। তাকে অপহরণ করা হয়নি। তবে অভিযোগকারীকে মামলা দিয়ে জেলে পাঠানোর হুমকির অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে স্থানীয়দের দাবি জনগণের শেষ ভরষা পুলিশ। মানুষ উপায়ান্তর না পেয়ে পুলিশের দ্বারে ঘুরে আর পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে উল্টো ভুক্তভোগীকে শাষিয়ে দেয় তাহলে অসহায় মানুষরা একটি স্বাধীন দেশে পরাধীন হয়ে অনিশ্চিত জীবন নিয়ে বেঁচে থাকবে। অন্যদিকে পুলিশের ভুমিকাও তাদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে। পুলিশ বলতেই আতংক বিরাজ করবে সাধারণ মানুষের মনে। এলাকাবাসীর দাবি পুলিশ যেনো প্রতিটি অভিযোগকে গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যাতে অধিকতর নজরদারী রাখেন।